সবুজ অর্থনীতি ও বাংলাদেশ || Green economy and Bangladesh
সবুজ অর্থনীতি ও বাংলাদেশ | Green economy and Bangladesh
সবুজ অর্থনীতি ও বাংলাদেশ
পরিবেশ ও অর্থনীতি টেকসই উন্নয়নের পরিপূরক এক যুগপৎ সঙ্গী। কিন্তু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্ধ ছুটে চলায় তার থেকে ক্রমশই বিচ্ছিন্ন হচ্ছে পরিবেশ। পরিবেশহীন উন্নতির অলীক স্বপ্ন নিয়ে ছুটে চলা শ্রান্ত অর্থনীতি যেন হঠাই মূল্যহীন ধরিত্রীবাসীর কাছে। কেননা ধরিত্রীর সংকটকেই যেন তাড়িত করছে এ বিচ্ছিন্নতা। পৃথিবী জুড়েই পরিবেশ নিয়ে বিরাজ করছে প্রবল উল্কণ্ঠা। প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে উদ্বেগ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নামে প্রাকৃতিক সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহারে গ্রিন হাউস গ্যাসের ব্যাপক নিঃসরণসহ পরিবেশবিরােধী সব কর্মকাণ্ডে সৃষ্টি হয়েছে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি। পৃথিবীর এ বিপন্ন অবস্থা থেকে উত্তরণে ‘সেভ আওয়ার প্লানেট’ হৃদয় নিংড়ানাে আহ্বান থেকে উঠে এসেছে সবুজ অর্থনীতির ধারণা ও বাস্তবায়ন প্রেক্ষাপট। ক্রমশই জোরালাে হচ্ছে এতে সম অন্তর্ভুক্তির আহ্বান। রিও+২০ সম্মেলনের মূল এজেন্ডাও এই সবুজ অর্থনীতি।
সবুজ অর্থনীতি:
সবুজ অর্থনীতির ইংরেজি প্রতিশব্দ Green Economy। সবুজ অর্থনীতির সবুজ’ প্রত্যয়টি পরিবেশের প্রতি নির্দেশ করে। এ অর্থে সবুজ অর্থনীতি বলতে বােঝায় পরিবেশ বান্ধব অর্থনীতি। এটি পরিবেশ ও অর্থনীতির মাঝে যােগসূত্র স্থাপন করে। অর্থাৎ অর্থনীতির সাথে সম্পর্কিত সব সিদ্ধান্তই পরিবেশের অনুকূল থাকবে। পরিবেশের কোনাে রূপ ক্ষতি না করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কার্যাবলি পরিচালনা সবুজ অর্থনীতির মূল কথা। সবুজ অর্থনীতি হচ্ছে সেই অর্থনীতি, যার দ্বারা পরিবেশগত ঝুঁকি ও বাস্তুতান্ত্রিক অভাব কমিয়ে মানবকল্যাণ ও সামাজিক সমতা প্রতিষ্ঠা করা যায়। সবুজ অর্থনীতিতে সম্পদের যথােপযুক্ত ' ব্যবহার, নিম্নকার্বন অর্থনীতি এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তিকরণ নিশ্চিত হবে।
সবুজ অর্থনীতির বিভিন্ন দিক সবুজ জ্বালানি :
অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অন্যতম খাত জ্বালানি। প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা এবং খনিজ তেল জ্বালানির উৎস। ক্রমাগত ও অবিবেচনাপ্রসূত ব্যবহারে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট এখন মূর্তিমান আতঙ্ক। উন্নয়নের অন্যতম উপায় হিসেবে এর যথেচ্ছ ব্যবহার পরিবেশগত হুমকির একটি বড় কারণ। এর বিপরীতে - সবুজ জ্বালানির বা পরিবেশবান্ধব নগরায়নযােগ্য জ্বালানির প্রতি গুরুত্ব প্রদান করে সবুজ অর্থনীতি। সবুজ অর্থনীতির এ গুরুত্বপূর্ণ খাতটি সৌরশক্তি, বায়ােগ্যাস প্রকল্প, বায়ুবিদ্যুৎ ইত্যাদিকে অন্তর্ভুক্ত করে।
সবুজ কর্মসংস্থান :
সবুজ কর্মসংস্থান বলতে পরিবেশ বান্ধব কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রসমূহে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য শক্তির বিস্তৃত ক্ষেত্রসমূহে ও কর্মসংস্থানকে বুঝায়। নবায়নযােগ্য শক্তির প্রচুর ব্যবহার নিশ্চিতের মধ্যেই সবুজ কর্মসংস্থানের প্রসার ও বিস্তৃতি নির্ভরশীল।
সবুজ বিনিয়োগ :
সবুজ অর্থনীতির অন্যতম দিক হচ্ছে সবুজ বিনিয়ােগ। পরিবেশবান্ধব শিল্প, প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পসমূহে বিনিয়ােগই এর মূল কথা। সবুজ বিনিয়ােগ সব ধরনের ব্যবসায়কে পরিবেশের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে এবং অধিক কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি করবে।
সবুজ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা :
সবুজ অর্থনীতির। আরেকটি প্রধান দিক হচ্ছে সবুজ বর্জ ব্যবস্থাপনা গড়ে তােলা। এটি চারটি R-কে বােঝায়- Reduce (দূষণ হ্রাস), Reuse (পুনঃব্যবহার), Recycle (পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ)। ও Recover (পুনঃআবরণ)। সবুজ অর্থনীতির এ ফর্মুলা পরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধমুক্ত পরিবেশ। নিশ্চিত করার পাশাপাশি নবায়নযােগ্য শক্তি ও পণ্য উৎপাদনেও সহায়ক।
সবুজ পরিবহন :
পরিবেশের ওপর কোনাে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না— এমন সব পরিবহন বা চলাচল মাধ্যম যেমন বাস, ট্রাক, নৌজাহাজ ইত্যাদি সবুজ পরিবহনের উদাহরণ যা পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহার করে চলাচল করে। বাতাসে কার্বন তথা গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্রা হ্রাস করা। সবুজ অর্থনীতির এ দিকটার প্রধান লক্ষ্য।
সবুজ কৃষি :
সবুজ অর্থনীতির এ দিকটি মূলত ভূমি ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত। জমির উর্বরতা ধরে রাখা এবং সাথে সাথে উর্বরতা বৃদ্ধিসহ স্বল্প ভূমিতে অধিক পরিমাণে। নিরাপদ ফসল উৎপাদন এর মূল কথা। এ ব্যবস্থা রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার, শস্যের বহুমুখীকরণ, মিশ্র ফসল উৎপাদনসহ পরিবেশবান্ধব সব উৎপাদন ও উৎপাদন ব্যবস্থার কথা বলে।
নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনা :
সবুজ অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনা বিষয়টি নদ-নদী, জলাশয়ের পানি নানাবিধ দূষণের কবল থেকে মুক্ত রাখার কর্মপরিকল্পনা এবং দূষিত পানিকে যথার্থ প্রক্রিয়ায় পরিশােধন করাসহ ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি সংরক্ষণ করে তা ব্যবহারের কর্মকৌশল। বাস্তবায়ন করে সুপেয় পানি প্রাপ্তির নিশ্চয়তা। প্রদানে সবুজ অর্থনীতির এ দিকটি গুরুত্বপূর্ণ।
টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সবুজ অর্থনীতি:
উন্নয়ন ধারণার ব্যাপক পরিবর্তন ধারার একটি দিক হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন। উন্নয়নের স্থায়িত্ব ও পরিবেশগত প্রভাবের বিষয়টি নিয়ে এ উন্নয়ন ধারণার উদ্ভব ও পথচলা। টেকসই উন্নয়ন এমন উন্নয়ন, যেখানে বর্তমান প্রজন্মেয় ভােগের ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রয়ােজনীয় ভােগের সম্ভাব্যতা সীমিত হবে না। অর্থাৎ আন্তঃপ্রজন্ম সমতা এর মূল কথা। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ- এ তিনটি হচ্ছে টেকসই উন্নয়নের প্রধান স্তম্ভ। পরস্পর সম্পর্কিত ও আন্তঃনির্ভরশীল এ স্তম্ভগুলাের যুগপৎ অগ্রযাত্রায় টেকসই উন্নয়ন সাধিত হয়। টেকসই উন্নয়নের এ পথের একটি গুরুত্বপূর্ণ সঞ্চালক হচ্ছে সবুজ অর্থনীতি'। পরবর্তী প্রজন্মের ভােগের অধিকারকে অক্ষুন্ন রাখতে টেকসই উন্নয়ন যেমন উন্নয়নের সাথে সাথে পরিবেশ সংরক্ষণে জোড় দেয়, তেমনি সবুজ অর্থনীতিও পরিবেশকে বাঁচিয়ে উন্নয়নের কথা বলে। অর্থাৎ উন্নয়ন, তবে তা পরিবেশবান্ধব। সবুজ অর্থনীতিতে পরিবেশ অর্থনৈতিক উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি, ভ্যালু, ভারসাম্য রক্ষা এবং দীর্ঘ মেয়াদি সমৃদ্ধির সূচক যা পরিবেশগত ঝুঁকি নিরসনের সাথে সাথে প্রবৃদ্ধিকে সমুন্নত রাখে। এককথায় ধরিত্রীকে সংকটে না ফেলে উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিকে অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম সবুজ অর্থনীতি।
সবুজ অর্থনীতি পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রয়াস চালায়। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক পুঁজি রক্ষা ও উন্নয়ন সবুজ অর্থনীতির একটি প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের উপর জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে নির্ভরশীল উপকূলীয় বা বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকার বিশাল অংশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে ও দারিদ্র্য দূরীকরণে ভূমিকা রাখে সবুজ। অর্থনীতি। আর মৎস্য, বনায়ন ও কৃষিসহ অন্যান্য খাতে ক্ষুদ্র বিনিয়ােগ এর প্রধান উপায়। সবুজ অর্থনীতিতে উন্নয়ন পরিবেশকে সাথে নিয়ে হওয়ায় উন্নয়নের অংশীদারিত্বে শামিল হতে পারে সকল শ্রেণীর মানুষ, যা প্রান্তিক পর্যায়ের দারিদ্র্য দূরীকরণ বা হ্রাসে কার্যকর। এটি একই সাথে শহুরে ও গ্রামীণ দারিদ্র্য হ্রাসে সমতা বিধান করে।
বাস্তবায়নে সীমাবদ্ধতা ও করণীয়:
সবুজে ঘেরা সুন্দর ভবিষ্যৎ পৃথিবী গড়ার। শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হবে সবুজ অর্থনীতি— একথা এখন অনেকটাই প্রমাণিত সত্য। কিন্তু বিশ্বব্যাপী সবুজ অর্থনীতির সমবাস্তবায়নে রয়েছে নানা প্রচ্ছন্ন বাধা। অঞ্চলভিত্তিক উপযােগিতা নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। তদুপরি উন্নত দেশগুলাের কথা ও কাজের। বিস্তর ফারাক ও ভােগবাদী দর্শন সবুজ। অর্থনীতির প্রকৃত বাস্তবায়ন ও যাত্রা নিয়ে সীমাহীন সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। কেননা কার্বন নিঃসরণে মূলত ধনী দেশগুলাে। দায়ী হলেও এ বিষয়ক গৃহীত বিন্নি চুক্তি বা আন্তর্জাতিক নীতিকে তােয়াক্কা না করার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রয়েছে চোখের সামনেই। তাই সবুজ অর্থনীতি নিয়ে আশার সঞ্চার হলেও তা গুড়েবালি হওয়ার সন্দেহও অমূলক নয়। তবে এর বাস্তবায়ন সম্ভব। এক্ষেত্রে ধনী দেশগুলােকে সত্যিকারের সদিচ্ছা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সবার আগে দিতে হবে শর্তহীন প্রযুক্তি ও অর্থ সহায়তা, যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলাে সমভাবে এতে অংশগ্রহণ করতে পারে। অর্থাৎ সবুজ অর্থনীতিতে সমঅন্তর্ভুক্তি বা সমতার নিশ্চয়তা বিধান করা জরুরি তা না হলে ধনী দেশ শুধু বলে যাবে আর উন্নয়নশীল দেশগুলাে শুধু পালন করে যাবে— এমন ধারণায় মুখ থুবড়ে পড়তে পারে সবুজ অর্থনীতি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের আশংকা আরও বেশি। কেননা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমূহ ক্ষতির শীর্ষ তালিকায় এর অবস্থান। তাই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা এবং দারিদ্র্য নিরসন কার্যক্রমসহ দেশের বাণিজ্য সম্ভাবনা যেন কোনােভাবেই ব্যাহত না হয় সবুজ অর্থনীতি বাস্তবায়নে সে | দিকগুলাের বিবেচনা আনতে হবে সর্বাগ্রে।
বাংলাদেশের সবুজ অর্থনীতি
বাংলাদেশের সবুজ অর্থনীতি:
পরিবেশ দূষণ কিংবা উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের ভূমিকা নগন্যমাত্রায় হলেও। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সম্ভাব্য সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলাের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ক্রমাগত পরিবেশ বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ধ্বংসসাধন দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। বিগত দশকগুলাের তুলনায় পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদের শূন্যতা বেড়েছে বহুগুণ। বন উজাড়করণ, বাস্তুসংস্থান
ধ্বংস এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি— এ শূন্যতাকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। অল্প আয়তনের ছােট্ট বাংলাদেশের বিশাল জনসংখ্যা প্রাকৃতিক বনজসম্পদের ধ্বংস সাধন করছে প্রতিনিয়ত। ফলশ্রুতিতে একটি দেশের জন্য সর্বনিম্ন ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকার প্রয়ােজনীয়তা থেকে অনেক দূরে বাংলাদেশ। এর পাশাপাশি দেশে কৃষি পণ্য উৎপাদন বাড়লেও রাসায়নিক সার এবং কীটনাশকের অপব্যবহারে পানি দূষণের সাথে সাথে জমি মানের বা উর্বরতার অবনমন ঘটছে। ওতপ্রােতভাবে জড়িত থাকায় এটি একই সাথে মানুষের নানা স্বাস্থ্যগত সমস্যাকেও উস্কে দিয়েছে। পানি দূষণজনিত কারণে পরিবেশগত বিপর্যয় অত্যন্ত বিস্তৃত ও গভীর। আর দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের উপরই এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে সর্বাধিক দূষণের শিকার মেক্সিকোর বায়ু দূষণের চেয়েও বেশি ঢাকার বায়ু দূষণ। পুরাতন যানবাহনের কালাে ধোঁয়া, ইট খােলার নির্গত ধোয়াসহ কলকারখানায় নির্গত বর্জ্য ঢাকার বায়ু দূষণের জন্য প্রধানভাবে দায়ী। এছাড়া দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও পরিবেশকে দূষিত করছে বিভিন্ন উপায়ে। সব মিলিয়ে পরিবেশের প্রতি নির্দয় ও বিরূপ আচরণে সবুজ সংকটের এক উচ্চ ঝুঁকির মুখে দাড়িয়ে বাংলাদেশ। অপ্রিয় হলেও সত্য, মানুষের নির্বিচার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলেই এ সার্বিক সবুজ সংকট। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে খাতভিত্তিকভাবে যার অবদানও উল্লেখযােগ্য। কিন্তু কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা উন্নতি দেশের টেকসই উন্নয়ন নয়। প্রকৃতি, পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন এর সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। একটি আরেকটির পরিপূরক। তাই একদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা উন্নয়ন, অন্যদিকে তার সাথে পরিবেশ সংরক্ষণ— দুই-ই দেশের জন্য অপরিহার্য। এমন প্রেক্ষাপটে সবুজ অর্থনীতিই হতে পারে যুগপৎ উন্নয়নের শ্রেষ্ঠ বিকল্প মাধ্যম। মধ্যম আয়ের দেশের পথে আগুয়ান সবুজ সংকটে জর্জরিত দেশের জন্য বরং সবুজ অর্থনীতি। এক অসাধারণ উপায়রূপে আবির্ভূত হয়েছে। আর এ পথে এখন অনেকটাই ধাবিত বাংলাদেশ।
গৃহীত কার্যক্রম :
পরিবেশবান্ধব প্রয়ােজনীয় নীতিমালা, কৌশল, কর্মপরিকল্পনা, আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন ও জারি
*নবায়নযােগ্য জ্বালানি কর্তৃপক্ষ আইন অনুমােদন।
*নবায়নযােগ্য জ্বালানি ব্যবস্থার। প্রসার, যেমন— সৌর বিদ্যুৎ ও বায়ােগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের দ্রুত সম্প্রসারণ কর্মসূচি।
*নবায়নযােগ্য জ্বালানির বাণিজ্যিক উৎপাদনের উপর থেকে পাঁচ বছরের জন্য আয়কর মওকুফকরণ।
*উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তােলা কার্যক্রম।
*পরিবহনে তুলনামূলক কম দূষণকারী জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি ৩ পৌর বর্জ। থেকে কমপােস্ট বা জৈব সার তৈরির সিডিএম প্রকল্প চালু এবং ইতােমধ্যেই এর কার্বন ক্রেডিট লাভ।
* ইটভাটা থেকে সৃষ্ট মারাত্মক বায়ু দূষণের হ্রাসের লক্ষ্যে এগুলােকে পরিবেশবান্ধব উন্নত প্রযুক্তিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চালুকরণ।
*Polluters Pay Principle-এর আওতায় পরিবেশগত ছাড়পত্রের শর্তানুসারে শিল্পসমূহের দূষণ নিয়ন্ত্রণে এনফোর্সমেন্ট ও মনিটরিং কার্যক্রম জোরদারকরণ।
*বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে Green Banking-এর নীতিমালা জারি ইত্যাদি।